নামাজে যা কিছু পড়ি তার পুরো অর্থ



আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত/নামায ফরজ করেছেন তা আমরা বুঝে পড়ি না বা বোঝার চেষ্টাও করিনা(সালাত/নামায কেন এবং কীভাবে পড়বো তাও হয়তো জানি না)। হাশরের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নামাযের হিশাবই সর্বপ্রথম নিবেন।
তাই আমাদের সকলকে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। নিচে নামাযে আমরা কী পড়ি সে সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরা হল।
১. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। অর্থঃ পরমকরুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
২. তাকবীরে তাহরীমাঃ উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার অর্থঃ আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
৩.ছানাপড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওবিহামদিকা ওতাবারাকাছমুকা ওতাআ‘লাজাদ্দুকা ওলাইলাহাগইরুক। অর্থঃ আয়আল্লাহ! আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি তোমার প্রশংসার সহিত, বরকতময় তোমার নাম। সুউচ্চ তোমার মহিমা। এবং তুমি ভিন্ন কোন মা‘বুদনাই।
৪.আউযুবিল্লাহ পড়াঃ উচ্চারণঃ আউযুবিল্লা হিমিনাশ শায়তানির রাঝিম। অর্থঃ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৫. সূরায়ে ফাতিহা পড়াঃ উচ্চারণঃ (১)আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন, (২)আররাহমানির রাহিম, (৩)মালিকি ইয়াওমিদ্দিন, (৪)ইয়্যাকা না‘বুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন, (৫)ইহদিনাসসিরাতাল মুসতাকীম, (৬)সিরাতল্লাযিনা আনআমতা আলাইহিম, (৭)গাইরিলমাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দ—লিন।(আমীন)

অর্থঃ (১)সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, (২)যিনি সমস্ত জগতসমূহের সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা। (৩)যিনি দয়াময়, অত্যন্ত
দয়ালু, যিনি বড় মেহেরবান। (৪)যিনি কর্মফল দিবসের একচ্ছত্র মালিক। (৫)আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করিতেছি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রর্থনা করিতেছি। (৬)আমাদেরকে দোখাও সঠিক সরল পথ। (৭)তাদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করিয়াছ। যারা তোমার অনুগ্রহের পাত্র হইয়াছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার পক্ষ থেকে গযব নাযিল হয়েছে। বিঃ দ্রঃ উক্ত সূরা(ফাতিহা) শেষ করার পর আমীন বলতে হবে এবং সূরা ফাতিহা তথা আলহামদুর সাথে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব। তবে ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে তা নির্দিষ্ট। সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর যে ১০ টি সূরা আমরা অধিক সময় পাঠ করে থাকি, সেগুলো অর্থসহ পেতে ভিজিট করুন।
৬. রুকুর তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আযিম।
অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
৭. রুকু হইতে উঠিবার সময়ের তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ
অর্থঃ যে আল্লাহর প্রশংসা করিয়াছে, আল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করিয়াছেন।
৮. রুকু থেকে উঠে দাড়িয়ে থেকে পড়তে হবেঃ উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়্যেবান মুবারাকানফিহ। অর্থঃ হে আমাদের প্রতিপালক অধিক অধিক প্রশংসা ও পবিত্রতা তোমারই। (এখানে রাব্বানা লাকাল হামদ পর্যন্ত পড়লেও হবে।)
৯. সেজদায় তাসবীহ পড়াঃ উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।
অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করিতেছি।
১০. উভয় বৈঠকে(বসা অবস্থায়) তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পড়াঃ উচ্চারণঃ আত্যাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওস্ সলাওয়াতু ওত্ তয়্যেবাতু আসসালামুআলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওরাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু আসসালামুআলাইনা ওয়া‘লা ঈবাদিল্লাহি সসলিহিনা আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদাং আবদুহু ওয়ারাসূলুহ।
অর্থঃ সমস্ত মৌখিক ইবাদাত, সমস্ত শারীরিক ইবাদাত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা‘আলার জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি ও তাহার বরকতসমূহ নাযিল হউক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা‘আলার নেক বান্দাদের প্রতি তাঁহার শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন মা‘বুদ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
১১.দুরুদ শরীফ পড়াঃ উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লেআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা সল্লেইতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিকআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা বারাকতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করিয়াছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাযিল কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাযিল করিয়াছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সন্মানিত।
Share on Google Plus

About news zone

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment