"আমার শ্বশুর আমাকে খুব ভালোবাসতেন..."



(প্রিয়.কম) জীবন থাকলে সম্পর্ক থাকবেই। আর সম্পর্ক থাকলে থাকবে সমস্যা। প্রতিদিন ফেসবুকের ইনবক্সে ও ই-মেইলে আমরা অসংখ্য সম্পর্ক ভিত্তিক প্রশ্ন পাই, যেগুলোর কথা হয়তো কাউকেই বলা যায় না। 

আপনি চাইলে নিজের এমনই কোন একান্ত ব্যক্তিগত সমস্যার কথা লিখে জানাতে পারেন আমাদের। আমরা প্রতিদিন চেষ্টা করবো বাছাইকৃত কিছু সমস্যার সমাধানে কাঙ্ক্ষিত পরামর্শটি দেবার। সমস্যার কথা লিখে জানান আমাদের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। নাম গোপন রাখতে চাইলে লিখে দেবেন "নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক"। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা। 

"আপু, আমার জীবন নিয়ে বড় বিপাকে পড়েছি। আমার সমস্যার কিছু অংশ তুলে ধরবো। দয়া করে উত্তর দেবেন আপু।

আমার বিয়ে হয়েছে ১২ বছর। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি কেন যেন আমাকে সহ্য করতে পারে না। আমার সব কিছু নিয়েই খুঁতখুঁত করেন। এটা এভাবে না, ওভাবে। আমার শ্বশুর আমাকে খুব ভালোবাসতেন। উনার কাছেও আমার শাশুড়ি আমাকে নিয়ে সব সময় কথা লাগান।

আমার বিয়ের সাতবছর পর আমার দেবর বিয়ে করে। এখন ওর বৌ অনেক ভালো উনাদের কাছে। এসব নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়। একসময় আমার স্বামী আমাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। এরপর আমার শ্বশুর আবার মানুষ ধরে একত্র হবার জন্য। আমি হই নি। প্রায় পাঁচবছর আলাদা খেলাম। এখন এই তিন মাস হয় আবার একত্র হলাম, আমার ইচ্ছায় নয়, স্বামী ও শ্বশুরের ইচ্ছায়।

আপু কোনোমতে একমাস ভালো গিয়েছে, আবার একই কাহিনী শুরু। শ্বশুরের সঙ্গে দেবরের বৌও এটা ওটা বলে। আপু এসব নিয়ে একটুও শান্তি নেই পরিবারে। আমি বড়, আমার কোনো মূল্যই নেই। এসব আমি একটুও মেনে নিতে পারছি না। আমার দুটি ছেলে। বড়টি পঞ্চম ও ছোটটি প্রথম শ্রেনিতে পড়ে। ওদের বাবা ব্যবসা করে। আমি এস.এস.সি পাস। এখন চাচ্ছি আমার বাবার বাড়ি চলে যাবো।

আমি আবার লেখাপড়া করতে চাই আপু। সংসার করি শান্তির জন্য। যেখানে শান্তি নেই, সেখানে থেকে কী করবো! আমার দুভাই আছে। আমি একা বোন। ভাইয়ারা বলে- অশান্তি করে থাকবি কী করে! আপু আমাকে একটু শান্তি দিন। আমি কী করবো, দয়া করে বলবেন প্লিজ।"  



পরামর্শ:

আপু, আমার মনে হয় আবারও যৌথ পরিবারে ফিরে এসে আসলে বড় ধরণের ভুল করেছেন। আপনার সমস্যাটি খুবই স্পর্শকাতর। একদিকে স্বামীর সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক,শ্বশুরের সাথে স্নেহের সম্পর্ক। কিন্তু তারপরও বলবো আপু যে জীবনে মাঝে মাঝে নিজের শান্তির কথাটাই আগে ভাবতে হয়। যেহেতু আগেই জানতেন যে ফিরে এলে কী কী হতে পারে, সেক্ষেত্রে যে করেই হোক ফিরে আসাটা উচিত হয়নি।

স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে যাবেন বা বা আলাদা ত্থাকবেন, এই ব্যাপারটাকে আমি সমর্থন করি না। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আসলে করার কিছুই থাকে না। তবে আপু, ফাইনাল একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে প্রথমে স্বামীর সাথে একবার কথা বলুন। তাঁকে স্পষ্ট করে জানান যে এভাবে আপনি থাকবেন না এবং আপনি আর সহ্য করতে পারছেন না। স্বামী যদি আপনাকে বুঝতে না পারেন, তাহলে নিজের পরিবারের দারস্থ হোন। পরিবারকে দিয়ে স্বামীর সাথে কথা বলান, তাঁকে বোঝাতে চেষ্টা করুন। আপনাদের দুজনের এতদিনের সংসার, সন্তান, দাম্পত্য। স্বামী নিশ্চয়ই একটু হলেও সমঝোতার চেষ্টা করবেন। 

তাতেও যদি কাজ না হয় আপু, নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিন। কারণ আপনার কথাটা ঠিক, মানুষ সংসার করে শান্তির জন্য। শান্তি না থাকলে আর সংসারের বোঝা টেনে লাভ কী। 

Share on Google Plus

About নিউজ রুম

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment